Hot Posts

6/recent/ticker-posts

আয়নাঘর কী ?

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে একের পর এক তার নানা কুকীর্তি বেরিয়ে আসছে। রাজনৈতিক ভিন্নমত পোষণকারীদের কে দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বহু মানুষকে গুম  করা হয়েছে যে গোপন কারাগারে গুম  করা হতো সেই জায়গাটার ছদ্মনাম হলো আয়না ঘর। শেখ হাসিনার আস্থাভাজন বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার কিছু অসৎ অফিসার এই আয়না ঘর পরিচালনা করতো। আজকের পর্বে শেখ হাসিনার গোপন কারাগার আয়না ঘর সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইনটেলিজেন্স (DIRECTORATE GENERAL OF FORCES INTELLIGENCE)বা DGFI হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে যে ডিজিএফআই এর  কাউন্টার ট্যুরিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো(COUNTER TERRORISM INTELLIGENCE BURE)বা CTIB আয়না ঘর নামে পরিচিত এই কুখ্যাত কারাগারটি রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। ২০২২ সালে সুইডেন ভিত্তিক একটি স্বাধীন সংবাদ মাধ্যম NETRA NEWS এর করা একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আয়না ঘরের বিষয়টি সবার সামনে উঠে আসে। সেখান থেকেই দেশের মানুষ জানতে পারে যে বিভিন্ন সময়ে বলপূর্বক গুম এর শিকার ব্যক্তিদেরকে আয়না ঘরে আটক করে নির্যাতন চালানো হতো।  আয়না ঘরের ঢাকা সেনানিবাস এর ভেতরেই অবস্থিত বলে ধারণা করা হয়। আয়না ঘরে বন্দি থাকা সাবেক এক সেনা সদস্য জানিয়েছেন অতীতে এই জায়গাটি জয়েন্ট ইন্টাররোগেশন সেল নামে পরিচিত ছিল। পরবর্তীতে একে সংস্কার ও বর্ধিত করে আয়না ঘর বানানো হয়েছে। গুমের শিকার হওয়া বেশ কয়েকজন সাবেক সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা আয়না ঘরের অবস্থান প্রকাশ করেছেন।  তারা জানিয়েছেন এই আয়না ঘরটি DGFI  অফিসের ঠিক পেছনেই অবস্থিত এখানে কমপক্ষে ১৬ টি কক্ষ রয়েছে যেখানে একসাথে ৩০ জনকে বন্দী করে রাখা যায়। আয়না ঘরের দায়িত্বে থাকা কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা গোপন এই কারাগারের ছবিও প্রকাশ করেছেন। 



এসব ছবি দেখলেই বোঝা যায় গোপনে কারাগারে কাউকে বন্দী করা কতটা অমানবিক। এখানে বহু লোককে বিনা বিচারে বছরের পর বছর এমনকি যুগের পর যুগ আটকে রাখা হয়েছে। আয়না ঘরের বন্দীদের একজন বলেন এসব কয়েদ খানার দেয়ালে বহু লোকের নানা রকমের আর্তনাদ খোদাই করে লেখা আছে


 কত লোককে যে এখানে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। সবাইকে  যে এখানে দীর্ঘ সময় বন্দি করে রাখা হয় এমনও নয়।  অনেককেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, আবার অনেককে এখান থেকে হত্যা করা হয়েছে আয়না ঘরের ছবি হিসেবে সামাজিক মাধ্যমে এরকম কয়েকটি ছবি প্রচারিত হচ্ছে যেখানে দেখা যাচ্ছে বহু মানুষের কঙ্কালের স্তূপ।


ছবিটির সত্যতা সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায়নি।  তবে আয়না ঘরের বন্দীদের নির্যাতনের কথা শুনে যে কোন হৃদয়বান ব্যক্তির মনে হবে এমন অমানবিক পরিবেশের দীর্ঘদিন বন্দি করে রাখার চেয়ে কাউকে হত্যা করাও অনেক ভালো। অভিযোগ রয়েছে DGFI এর কিছু অসৎ কর্মকর্তা শেখ হাসিনা সরকারের কাছ থেকে অবৈধ রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য এসব কর্মকাণ্ড করেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বিচারবহির্ভূত হত্যা নির্যাতন এবং জোরপূর্বক গুমের অভিযোগগুলো বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।হাসিনা সরকার পতনের পরপরই এ ধরনের মানবতা বিরোধী অপরাধের প্রমাণ হাতে নাতে পাওয়া যায়।   বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে শুধু ঢাকা সেনানিবাস নয় সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে এরকম আরো বেশ কিছু আয়না ঘর থাকতে পারে।
 

Post a Comment

0 Comments