সাগরের প্রাণীদের মধ্যে ডলফিন এবং হাঙর মানুষের কাছে বেশ পরিচিত তবে এদের মাঝে রয়েছে ব্যাপক পার্থক্য ডলফিন বুদ্ধিমান মানুষের প্রতি বন্ধুসুলভ, ডলফিন মানুষের সঙ্গে যে অকৃত্রিম বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেছে তার বড় প্রমাণ পানিতে পড়া বিপদগ্রস্থ মানুষ মাত্রই জানে।
এমন বহু ঘটনা আছে,
যেখানে ডুবন্ত মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে ডলফিন। ডলফিনের বুদ্ধিমত্তা এর একটি বড়ো কারণ। ।মানুষের সমান মগজ আছে এ প্রাণীর। এ কারণেই এরা বেশ বুদ্ধিমান তাছাড়া যথেষ্ট সামাজিকও এরা এ কারণেই ওরা নিয়মিত দল বেঁধে জীবন কাটায় কিংবা বলা যায় জীবন যাপন করে এখানে ওদের সঙ্গে মানুষের বড় মিল বলা যায় বিপরীতে হাঙর মানুষের জন্য বেশ বিপজ্জনক ভয়ংকর দাঁত আর আক্রমণাত্মক স্বভাবের জন্য সাগরের অন্যতম প্রভাবশালী প্রাণী হিসেবে ধরা হয় হাঙরকে।
কিন্তু অবাক করা ব্যাপার সাগরে ভয়ঙ্কর এই হাঙ্গর ই উল্টো ডলফিনদের যমের মত ভয় পায়। কিন্তু কেন এমন হয়। ১৯৯৬ সাল, মার্টিন রিচারসন নামের এক ব্রিটিশ ডুবুরি মিশরের সিনায় উপদ্বীপে লোহিত সাগরে সাঁতার কাটছিলেন এক হাঙ্গর তাকে আক্রমণ করে তিনটি ডলফিন রিচারসন দিকে ঘুরছিল কেবল ঘুরছিলই না পাকনা আর লেজ ঝাপ্টে ওরা হাঙরটাকে ভয় দেখাচ্ছিল। ডলফিন গুলোর কারণেই বেঁচে যান রিচারসন। হাঙরের আক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচানোর এমন ঘটনা আরও আছে।
ডলফিনকে আমরা শান্ত স্বভাবের প্রাণী হিসেবেই জানি মানুষকে খেলা দেখে বিনোদন দিতেও দেখা যায় ডলফিনকে। কিন্তু প্রয়োজনের সময় শান্ত স্বভাবের ডলফিনও হিংস্র হয়ে ওঠে। এরা সাগরের দলবদ্ধ থাকে এদের অনেক প্রজাতিকে সহজে দমানো যায় না। প্রতিরক্ষা আক্রমণ ও শিকার ধরায় ডলফিনের বুদ্ধিমত্তা প্রাণিকূলে বিরল। এই প্রজাতির ডলফিন খুবই ধূর্ত। একতাবদ্ধ ডলফিনের সাথে হাঙ্গর পেরে ওঠে না। কিন্তু যদি ডলফিন একাও থাকে তবেও হাঙ্গর হেরে যায় অর্থাৎ মুখোমুখি লড়াইও হাঙর হেরে যায়। কিন্তু কেন এমনটা হয় জানেন, কারণটা অবশ্যই ডলফিন এর দৈহিক গঠন। ডলফিনের লেজ তাকে বাড়তি নমনীয়তা দেয় এর কারণে সহজেই ক্ষিপ্রো আর দ্রুতগতির হয়ে উঠতে পারে।
বিপরীতে হাঙরের লেজ কম নমনীয় আর ক্ষিপ্র নয় ডলফিন যখন আক্রমণ করে তখন হাঙরের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তবে এর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ডলফিন এর মুখের দিকের প্রলম্বিত অংশ যাতে স্নায়ুট বলে। ডলফিনের আত্মরক্ষার অন্যতম ঢাল হিসেবে কাজ করে এই স্নায়ুট। এটাই আবার হাঙ্গরের সাথে লড়ায়ের অন্যতম অস্ত্র হয়ে যায়। দুরন্ত গতি আর ক্ষিপ্রতায় এই স্নায়ুট দিয়ে হাঙরের পেটের দিকে আঘাত করলেই হাঙ্গর কাবু হয়ে যায়।


0 Comments